মালয়েশিয়া থেকে বৈধপন্থায় রেমিট্যান্স প্রেরণে রাষ্ট্রদূতের

মালয়েশিয়া:বাপ্পী কুমার দাস

মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে হুন্ডি কিংবা অবৈধ পন্থায় রেমিট্যান্স না পাঠিয়ে যে কোন বৈধ পন্থায় রেমিট্যান্স পাঠানোর আহবান জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোঃ গোলাম সারোয়ার।
আজ সোমবার (১৫ আগষ্ট) সকাল ১০ টায় মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রদূত ।
দিবসের শুরুতে রাষ্ট্রদূত মো. গোলাম সরোয়ার দূতাবাস প্রাঙ্গণে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীর উপস্থিতিতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও উপস্থিত সবাইকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার মাধ্যমে জাতির পিতার স্মৃতির উদ্দেশ্যে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাতবরণকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনা ও দেশের সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয় এবং শাহাদতবরণকারীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
পরে দূতাবাসের হলরুমে জাতীয় শোক দিবসের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আলোচনাসভায় হাইকমিশনার মো. গোলাম সরোয়ার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু গভীরভাবে মানুষকে ভালোবাসতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন জনগণকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে না পারলে অধিকার প্রতিষ্ঠা কিংবা উন্নয়ন কিছুই সম্ভব নয়। জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনই ছিল বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের একমাত্র দর্শন। বাঙালির স্বাধীনতার অধিকার প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু তার জীবনের বড় অংশ কারাগারে কাটিয়েছেন। মামলা, জেল, জুলুম ও মৃত্যুভয় তাকে লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করাতে পারেনি। ফাঁসির মঞ্চে গিয়েও তিনি আপস করেননি। তিনি আরো বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রেরনের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে এটা খুবই দুঃখজনক। আপনারা প্রবাসী ভাই ও বোনেরা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স পাঠাবেন, বর্তমানে মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো, আরো ৫ লাখ কর্মীর এখানে কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করছি, ইতিমধ্যে কলিং ভিসার জন্য প্রায় ৩০ হাজার আবেদন পাইপ লাইনে আছে এবং কাজ চলছে।
দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির ইতিহাসে মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক ঘটনা এবং কলঙ্কময় দিন। জাতির পিতা সারাজীবন জেল, জুলুম ও অত্যাচার উপেক্ষা করে তার অসাধারণ অসামান্য বীরোচিত নেতৃত্বগুণে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
হাইকমিশনার আরও বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ভিশন-২০৪১ এবং ডেল্টা প্লান ২১০০ বাস্তবায়ন করছে। তিনি শোককে শক্তিতে পরিণত করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাইকে দৃঢ়ভাবে আত্মনিয়োগ করবার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আলোচনা সভায় বিশ্বময় চলমান সংকট উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়ে রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার বৈধ পথে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রেরণের জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান।
অনুষ্টানে রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন মিনিষ্টার শ্রম মো: নাজমুস সাদাত সেলিম।
প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন কাউন্সেলর বাণিজ্য মো: রাজিবুল আহসান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার ফার্ষ্টসেক্রেটারি মিয়া মোহাম্মদ কিয়াম উদ্দীন। পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন ফার্ষ্টসেক্রেটারি রাজনৈতিক রেহেনা পারভীন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) ও দূতালয় প্রধান রুহুল আমিন।
এ ছাড়া আলোনা সভায়, ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ এ খাস্তগীর, কাউন্সিলর শ্রম মো: জহিরুল ইসলাম, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা কমডোর মোস্তাক আহমেদ, কাউন্সিলর কন্স্যুলার জি এম রাসেল রানা, ফার্ষ্টসেক্রেটারি শ্রম এএসএম জাহিদুর রহমান, ২ য় সেক্রেটারি শ্রম সুমন দাসসহ সকল কর্মকর্ত বৃন্দ।
এ ছাড়া অনুষ্টানে আওয়ামীলীগ নেতা রাশেদ বাদল, ইন্জিনিয়ার খোকন, শফিকুর রহমান চৌধূরী, মনিরুজ্জামান মনির, দাতু আখতার হোসেন, মামুনুর রশিদ, সেলিম জালাল,নুর মোহাম্মদ ভূইয়া, রুহুল আমিন সহ আওয়ামী পরিবারের নেতাকর্মীরা উপস্হিত ছিলেন।